আলোচ্য বিষয়ের সারসংক্ষেপ
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহ্মাতুল্লাহ। আমি একজন বিশেষজ্ঞ সার্জন। আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে, ডাক্তারি বিষয় বাদ দিয়ে একজন ডাক্তার কেন এ বিষয়ে কলম ধরল? তাই এ বিষয়ে কেন কলম ধরেছি, সেটা প্রথমে আপনাদের জানানো দরকার। ছোটবেলা থেকেই ইসলামের প্রতি আমার গভীর আগ্রহ ছিল। তাই দেশে-বিদেশে যেখানেই গিয়েছি, ইসলাম সম্বন্ধে সে দেশের মুসলিম ও অমুসলিমদের ধারণা গভীরভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছি । বিলাত থেকে ফিরে এসে আমার মনে হল, জীবিকা অর্জনের জন্য বড় বড় বই পড়ে MBBS ও FRCS ডিগ্রী করেছি, এখন যদি পবিত্র কুরআন তাফসীরসহ বুঝে না পড়ে আল্লাহর কাছে চলে যাই, আর আল্লাহ যদি জিজ্ঞাসা করেন, ইংরেজি ভাষায় বড় বড় বই পড়ে বড় ডাক্তার হয়েছিলে কিন্তু তোমার জীবন পরিচালনার পদ্ধতি জানিয়ে আরবীতে আমি যে কিতাবটি (কুরআন মজীদ) পাঠিয়েছিলাম, সেটি কি তরজমাসহ বুঝে পড়েছিলে? তখন এ প্রশ্নের আমি কী জবাব দেব? এ উপলব্ধিটি আসার পর আমি কুরআন মজীদ তাফসীরসহ বুঝে পড়তে আরম্ভ করি। শিক্ষা জীবনের শুরুতে মাদ্রাসায় পড়ার কারণে আগে থেকে আরবী পড়তে ও লিখতে পারতাম। এরপর ইরাকে ৪ বছর রোগী ও সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলতে বলতে আরবী বলা ও বুঝার অভাবটা অনেকাংশে দূর হয়ে যায়।
লেখক পরিচিতি
প্রফেসর ডাঃ মোঃ মতিয়ার রহমান ১৯৫২ সালে বাংলাদেশের খুলনা জেলার ডুমুরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন মাদ্রাসায়। অতঃপর তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা নেন ডুমুরিয়া হাই স্কুল এবং সরকারী বি, এল কলেজ, দৌলতপুর, খুলনা থেকে। তিনি ১৯৭৭ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে MBBS ডিগ্রী লাভ করেন। ২য় এবং ফাইনাল প্রফেশনাল MBBS পরীক্ষায় তিনি ঢাকা বিশ্যবিদ্যালয়ে যথাক্রমে ৬ষ্ঠ এবং ১০ম স্হান অধিকার করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি রয়েল কলেজ অব ফিজিশায়নস্ এন্ড সার্জনস্, গ্লাসগো, ইউ, কে থেকে FRCS ডিগ্রী লাভ করেন।
তিনি কুরআন রিসার্চ ফাউন্ডেশন, ঢাকা, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান। ইসলামিক রিসার্চ ও দাওয়া এখন তার অগ্রাধিকার পাওয়া কাজ। আজ পর্যন্ত তিনি ইসলামের ৩৩ টি মৌলিক বিষয়ের উপর তার গবেষণা, পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করেছেন। তার গবেষণালব্ধ বিষয়সমূহ এবং বর্তমান মুসলিম জাতির জ্ঞান ও আমলের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। তিনি নিয়মিতভাবে তার গবেষণালব্ধ বিষয় নিয়ে টেলিভিশন ও রেডিওতে আলোচনা রাখেন।
বর্তমানে তিনি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের প্রধান এবং ল্যাপারোসকোপ যন্ত্রের দ্বারা পিত্ত থলির পাথর অপারেশনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী অভিজ্ঞ সার্জন।তিনি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, সভাপতি বা পরিচালক।